কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা নগরীতে রেজওয়ান হায়দার (২৮) নাকে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছুরিকাঘাতের পর দুর্বৃত্তরা তাঁর সঙ্গে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনার পরপরই রেজওয়ান হায়দারের স্ত্রী জাকিয়া রহমান একজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২ থেকে ৩ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই যুবকের পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার ১৫ দিন পার হলেও পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। এছাড়া অভিযোগটির কোন তদন্ত হয়নি। এ অবস্থায় অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে ওই যুবকের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
গুরুতর আহত রেজওয়ান হায়দার জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নারচর গ্রামের মৃত আলী হায়দারের ছেলে। তবে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়া বাগানবাড়ি এলাকায়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মেহেদী হাসান টিটু ওরফে কালা টিটু নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার মৃত কাশেমের ছেলে।
রেজওয়ান হায়দার বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি আমি গ্রামের বাড়িতে ১৬ লাখ টাকার জায়গা বিক্রি করি। কালা টিটু আমাকে আগ থেকেই চেনে। সে একজন ছিনতাইকারী এবং একাধিক মামলার আসামি। আমি বাড়িতে জায়গা বিক্রি করে টাকা নিয়ে শহরে আসছি, এমন খবর পেয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দক্ষিণ চর্থা এলাকার সৈয়দ বাড়ি গলির সামনে টিটু ও তার লোকেরা আমার উপর হামলা চালায়। তারা ভেবেছিলো জমি বিক্রির পুরো টাকা আমার কাছে আছে। কিন্তু আমি ৫০ হাজার টাকা আমার সঙ্গে রেখে বাকি টাকা আগেই ব্যাংকে জমা করে দেই।
রেজওয়ান হায়দার আরও বলেন, কালা টিটু পুরো টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যই আমার উপর হামলা চালায়। কিন্তু পুরো টাকা না পেয়ে সে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে আমাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে থাকার মোট ৫১ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই আমার স্ত্রী বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু ঘটনার ১৫দিন পার হলেও এখনও অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করেনি পুলিশ। এমনকি অভিযোগটির তদন্তও করেনি তাঁরা। উল্টো কালা টিটু তাঁর লোকজন নিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে- অভিযোগ প্রত্যাহার করতে। অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে বলছে- আমাকে জানে মেরে ফেলবে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মেহেদী হাসান টিটু। নিজেকে কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সহ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে টিটু বলেন, আমি রাজনীতি করি, আমার বিরুদ্ধে মামলা থাকাটাই স্বাভাবিক। রেজওয়ান আমার পূর্ব পরিচিত এবং সে আমার সঙ্গে চলাফেরা করতো। আমার বিরুদ্ধে করা এসব অভিযোগ সর্ম্পূণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
টিটুর দাবি, রেজওয়ানের সঙ্গে তাঁর অন্য বন্ধুদের ঝামেলা হয়েছে। ওই বন্ধুরা তাকে ছুরিকাঘাতে আহত করে। আহত হওয়ার পর রেজওয়ান আমার কাছে এসেছিলো তার পক্ষ হয়ে হামলাকারী বন্ধুকে মারধর করার জন্য। কিন্তু আমি তার ডাকে সাড়া দেইনি বলেই সে এখন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এছাড়া থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার মনে পড়ছে না। আহত ব্যক্তিকে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলুন। খোঁজ নিয়ে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page